নতুন বছরে ‘শৃঙ্খলমুক্ত’ টিনটিন-পপাই

টিনটিন-পপাই
টিনটিন-পপাই

জনপ্রিয়তায় শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই কমিক চরিত্র ‘টিনটিন’ ও ‘পপাই’ কপিরাইটের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়েছে।

কপিরাইটের মেয়াদ ৯৫ বছর শেষ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক ডোমেইনে বুধবার থেকে যুক্ত হয়েছে এই কমিক চরিত্রগুলো।

ফলে ১৯২৯ সালে প্রথম প্রকাশিত এই চরিত্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রে এখন থেকে কপিরাইট ছাড়া ব্যবহার করা যাবে।

কপিরাইটমুক্ত হওয়ার অর্থ হল যে কেউ অনুমতি বা অর্থ খরচ না করেই এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

এর আগে গত বছর মিকি মাউসের প্রথম কার্টুন ‘স্টিমবোট উইলি’ কপিরাইট মুক্ত হয়েছিল।

মিকি মাউস, পপাই কিংবা টিনটিন ছাড়াও এবছর যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক ডোমেইনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্র যুক্ত হল, যেগুলোর কপিরাইটের ৯৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে।

এছাড়া আরো ১২টি মিকি মাউস কার্টুন পাবলিক ডোমেইনে যুক্ত হচ্ছে।

মিকি মাউস নিয়ে ডিউকের সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব দ্য পাবলিক ডোমেইনের পরিচালক জেনিফার জেনকিন্স বলেন, “এটি একটি অসাধারণ সংগ্রহ! মিকি মাউসের নতুন ১২টি কার্টুন এবার পাবলিক ডোমেইনে আসছে, যেখানে সে প্রথম কথা বলে এবং সাদা গ্লাভস পরে।”

তিনি বলেছেন, ফকনার ও হেমিংওয়ের সাহিত্যকর্ম, আলফ্রেড হিচকক, সিসিল বি. ডি মিল এবং জন ফোর্ডের প্রথম সাউন্ড ফিল্ম, এবং ফ্যাটস ওয়ালার, কোল পোর্টার ও জর্জ গার্শউইনের সংগীত এবার মুক্ত হতে চলেছে পাবলিক ডোমেইনে।

‘আই অ্যাম পপাই দ্য সেইলর ম্যান’ কারো সঙ্গে মারপিটের আগে এই সংলাপ বলে তেড়েফুঁড়ে ওঠা পপাই নামের নাবিক সবার চেনা। এই চরিত্রটি সর্বপ্রথম সামনে আসে ১৯২৯ সালে। এই কার্টুন চরিত্রটির স্রষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের কার্টুনিস্ট এলজে সিগার।

গায়েগতরে রোটাপটকা হলে কি হবে, একবার স্পিনাচ খেয়ে নিলেই গোটা দশেক গুণ্ডাকে এক হাতে কাবু করতে পারে নাবিক পপাই।

আইকনিক কার্টুন চরিত্র ‘পপাই’ এর আবির্ভাব ঘটে ১৯২৯ সালে; ‘থিম্বল থিয়েটার’ নামের একটি পত্রিকার কমিক স্ট্রিপে।

তবে পপাইয়ের প্রথম দিকের সংস্করণগুলোই কেবল পাবলিক ডোমেইনে যুক্ত হবে।

বেলজিয়ামের কার্টুনিস্ট জর্জেস রেমি, যিনি লিখতেন অ্যার্জে ছদ্মনামে, তার সৃষ্ট জনপ্রিয় কমিক চরিত্র টিনটিন। বলা হয়, পৃথিবীর জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্রগুলোর মধ্যে টিনটিন অন্যতম।

১৯২৯ সালের ১০ জানুয়ারি বেলজিয়ামের একটি সংবাদপত্রে প্রথম টিনটিন প্রকাশিত হয়। আর টিনটিন সিরিজের প্রথম বইয়ের নাম ‘টিনটিন ইন দ্য ল্যান্ড অব দ্য সোভিয়েত।’

টিনটিন একজন সাংবাদিক। এই তরুণ কাজ করেন ‘ল্য প্যতি ভাঁতিয়েম’ নামের একটি পত্রিকায়। সেই পত্রিকার পক্ষ থেকে তাকে পাঠানো হয় রাশিয়ায়। এ রকমই একটি গল্প দিয়ে শুরুটা হয়েছিল।

টিনটিনের মাথায় বাঁকানো লালচে-সোনালী চুল এবং সঙ্গী কুকুর স্নোয়ির সঙ্গে তার একের পর এক অ্যাডভেঞ্চারের গল্প দশকের পর দশক ধরে বহু পাঠকের শৈশবের এক অক্ষয় অংশ হয়ে আছে।

সাহিত্যকর্মের মধ্যে কপিরাইটমুক্তের তালিকায় আছে উইলিয়াম ফকনারের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য সাউন্ড অ্যান্ড দ্য ফিউরি’ এবং আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘অ্যা ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’।

এছাড়া ভার্জিনিয়া উলফের নারীবাদী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ রচনা ‘’অ্যা রুম অব ওয়ানস ওন’ এবং জন স্টেইনবেকের প্রথম উপন্যাস ‘অ্যা কাপ অব গোল্ড’ পাবলিক ডোমেইনে ঠাঁই পেল।

আলফ্রেড হিচককের প্রথম সাউন্ড ফিল্ম ‘ব্ল্যাকমেইল’, জন ফোর্ডের ‘দ্য ব্ল্যাক ওয়াচ’, এবং মারক্স ব্রাদার্সের প্রথম চলচ্চিত্র ‘দ্য কোকোনাটস’ যুক্ত হল পাবলিক ডোমেইনে।

সঙ্গীতের মধ্যে আছে ১৯২৯ সালের বেশ কিছু জনপ্রিয় গান।

যেমন- ফ্যাটস ওয়ালারের ‘এইন্ট মিসবিহ্যাভিন’, কোল পোর্টারের ‘টিপটো থ্রু দ্য টিউলিপস’, এবং জর্জ গার্শউইনের ‘র‌্যাপসোডি ইন ব্লু’ ২০২৫ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যে কেউ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন।

১৯২৯ সালের অস্কারজয়ী প্রথম সাউন্ড ফিল্ম ‘দ্য ব্রডওয়ে মেলোডি’ এবং মারিয়ান অ্যান্ডারসনের ‘নোবডি নোজ দ্য ট্রাবল আই হ্যাভ সিন’র মত গানও কপিরাইট মুক্ত হল এবার।

সূত্র: দ্য এভারেজ

আরও পড়ুন