ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
বুধবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ভারত ওয়াশিংটনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। অন্যদিকে ২০২১ সালে প্রতিবেশী আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানের গুরুত্ব কমলেও দেশটি আমেরিকার মিত্র হিসেবেই রয়ে গেছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নয়টি স্থানে হামলা চালায় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়।
পাকিস্তান বলছে, ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে ভারত বলছে, পাকিস্তানি হামলায় ১০ জন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নহত এবং ৪৮ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান, যা এখনও নিশ্চিত করেনি ভারত। তবে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সরকারি কয়েকটি সূত্র বলছে, সেখানে তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে।
এ ঘটনার মধ্যে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “এটি লজ্জাজনক, আমরা এইমাত্র এ সম্পর্কে শুনলাম। আমার মনে হয়, অতীতের কিছুটা ঘটনার উপর ভিত্তি করে লোকজন জানত যে কিছু ঘটতে চলেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমি শুধু আশা করি, এটি খুব দ্রুত শেষ হবে।”

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলেন, তিনি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ওয়াশিংটন এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, রুবিও উভয় দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং “যোগাযোগের লাইন খোলা রাখতে এবং উত্তেজনা এড়াতে” তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল রুবিওকে বুধবার নেওয়া সামরিক পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার পর ট্রাম্পসহ শীর্ষ মার্কিন নেতারা ভারতের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ওই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপও করেননি।
গত মাসে বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার কূটনৈতিক লক্ষ্য অর্জন এবং গাজার যুদ্ধে ইসরায়েলের কূটনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যস্ত থাকার কারণে, উত্তেজনা শুরুর দিকে ওয়াশিংটন ভারত ও পাকিস্তানকে তাদের নিজেদের মতো করে পরিস্থিতি সামলাতে দিতে পারে।
২৫ এপ্রিল ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি মনে করেন “ভারত ও পাকিস্তান তাদের নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক করে নেবে। তারা একভাবে হোক বা অন্যভাবে হোক, এটি ঠিক করে নেবে।”