সম্ভাব্য ইরানি হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি ঘাঁটি থেকে কিছু বিমান ও যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নিয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে।
ইরানে হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করার একদিনের মাথায় এমন পদক্ষেপ নিল দেশটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে হামলার অনুমোদন দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় হামলা চালাবে কি না তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
এদিকে, ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা সাত দিনে গড়িয়েছে। দেশটিজুড়ে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ যেমন রাজধানী তেহরান থেকে সরে পড়তে শুরু করেছেন, তেমনি ইসরায়েলের সাধারণ মানুষও স্বস্তিতে নেই। বৃহস্পতিবারও খবর পাওয়া গেছে সেখানে বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হেনেছে, এরমধ্যে একটি হাসপাতালও রয়েছে।
সূত্রের বরাতে ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের সিনিয়র কর্মকর্তারা ইরানে আসন্ন হামলার সম্ভাবনা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এই পরিকল্পনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে সপ্তাহান্তে হামলা চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।
হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
“আমি এটা [হামলা] করতে পারি, আবার না-ও করতে পারি। মানে কেউই জানে না আমি কী করব,” যোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কাতারের মার্কিন দূতাবাস এক সতর্কবার্তা জারি করেছে। সেখানে তাদের মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের সাময়িকভাবে কাতারের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে প্রবেশ সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।
দোহার বাইরে মরুভূমিতে অবস্থিত এই ঘাঁটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে দুই মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়, বিমান ও যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও সরঞ্জামকে নিরাপদ রাখা।
তবে ঠিক কতগুলো বিমান ও জাহাজ সরানো হয়েছে এবং সেগুলো কোথায় নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তারা কিছু জানাননি।
একজন কর্মকর্তা বলেন, আল-উদেইদ ঘাঁটির যেসব বিমান শক্তিশালী সুরক্ষার আওতায় ছিল না, সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাহরাইনের একটি বন্দরের জাহাজগুলোও সেখান থেকে সরানো হয়েছে। এই বন্দরেই যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর অবস্থান করে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তাপের মধ্যে চলতি সপ্তাহের শুরুতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র বিপুলসংখ্যক ট্যাংকার বিমান ইউরোপে পাঠিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে আরও সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করছে।
এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অবস্থানরত একটি মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারও মধ্যপ্রাচ্যের দিকে রওনা হয়েছে।
বৈরী দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রকে না জড়াতে সতর্ক করেছে ইরান। জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত বুধবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সরাসরি জড়িত হয়, তাহলে ইরান ছেড়ে দেবে না।
এ সম্পর্কিত আরও খবর: