সারা দেশে যৌথবাহিনীর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানের তৃতীয় দিনে গাজীপুরে আরও ৮১ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগর এলাকা থেকে ৬৯ জন এবং জেলা শহর থেকে ১২ জন গ্রেপ্তার হন।
এ নিয়ে গাজীপুরে গত তিন দিনে গ্রেপ্তার ২৪৬ জন, যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
পুলিশ জানিয়েছে, গাজীপুর মহানগরীর আটটি থানায় অভিযান চালিয়ে ৬৯ জনকে আটক করেছে মহানগর পুলিশ।
অন্যদিকে, জেলার পাঁচটি থানায় অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে একই অভিযানে মহানগর ও জেলা পুলিশ প্রথম দিনে ৬৫ জন, রোববার রাতে ১০০ জন (মহানগর ৭৯ ও জেলা ২১) গ্রেপ্তার করেছিল।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটি-এসবি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, সোমবার রাতের অভিযানে নতুন করে ৬৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক বলেন, ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। সর্বশেষ অভিযানে আরও ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
গাজীপুরে গত শুক্রবার গভীর রাতে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করতে গিয়ে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে আহত হন অন্তত ১৪ জন। যাদেরকে পরবর্তীতে নিজেদের কর্মীসমর্থক বলে দাবি করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন।
এ ঘটনার পর শনিবার গাজীপুরে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা আওয়ামী লীগ ও এর অনুসারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়ে আল্টিমেটাম দেওয়ার পর সিদ্ধান্ত আসে সরকার সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করবে।
এছাড়া প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় গাজীপুর সদর থানার ওসিকে।
সরকারিভাবে এই সাঁড়াশি অভিযানকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে প্রচার করা হলেও কেন এরকম নাম সেবিষয়ে সরকারি কোনো পর্যায়ের স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ৫ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙা শুরু করে। এরপর বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও দলটির নেতাদের বাড়িতে হামলা চালায়।
পরবর্তীতে এসব ঘটনায় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজ থেকে দেওয়া হয় বার্তা- কঠিন হাতে এসব কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করা হবে।
অবশ্য এরপরও বিভিন্ন এলাকায় অব্যাহত ছিল হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ।
এ সম্পর্কিত আরও খবর: