গাজার আর্তনাদ: ‘দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মৃত্যু দেখছো, ক্ষমা করব না’

ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় সাত শিশুসহ ২১ জনের মৃত্যু। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান।
ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় সাত শিশুসহ ২১ জনের মৃত্যু। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় আল-মাওয়াসিতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় সাত শিশুসহ ২১ জন নিহত হয়েছেন, যারা পানি সংগ্রহের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন।

এই হামলা এমন এক এলাকায় ঘটেছে, যা ইসরায়েল ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।

একজন বাসিন্দা আলজাজিরাকে বলেছেন, “এরা শিশু ছিল, যারা পানি সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। তারা শুধুই বাচ্চা। দেখো তারা কী নিষ্ঠুরভাবে হামলা করল। তারা শিশুদের ওপর আক্রমণ করেছে, তারা তো পলাতক কোনো অপরাধী নয়।”

ওই বাসিন্দা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আল্লাহর কসম, তারা শিশু। কিছু সহানুভূতি দেখাও। যথেষ্ট হয়েছে। আমরা ক্লান্ত। রক্তপাত বন্ধ করো।”  

এদিকে এপি জানিয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা শহরের আরও ভেতরে প্রবেশ করেছে। স্থল ও বিমান হামলায় আরও অনেক বাসিন্দা নতুন করে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। বিমান ও ট্যাঙ্কের মাধ্যমে নগর কেন্দ্রের অন্যতম বৃহত্তম এবং জনবহুল এলাকা শেখ রাদওয়ানে হামলা চালানো হচ্ছে। 

গাজা শহরে ভয়াবহ বিমান হামলা এবং ভারী কামানের গোলা নিক্ষেপ শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আক্রমণাত্মক অভিযানের এক নতুন পর্যায় শুরু করছে। তুফা, শুজাইয়া, শেখ রাদওয়ান এবং রেমালের রাতের আকাশ ড্রোন হামলায় আলোকিত হয়ে উঠছিল। 

৬০ বছর বয়সী ৫ সন্তানের মা জাকেয়া সামি রয়টার্সকে বলেন, “ব্যস্ততম এলাকা শেখ রাদওয়ানের তাঁবুগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। দখলদাররা ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে। আমরা মারা যাব। যারা আমাদের মৃত্যু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে, তাদের আমরা ক্ষমা করব না।”  

শেখ রাদওয়ান এলাকার তিনটি স্কুলে সেনাবাহিনী গ্রেনেড ছুড়েছে। হামলার পর তাঁবুতে আগুন লেগে যায়। গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজা সিটির আল-আফ পরিবারের বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। 

মঙ্গল ও বুধবার ইসরায়েলি হামলায় মোট ১৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার গাজাজুড়ে শিশু, সাংবাদিকসহ ১০৫ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

এছাড়া ক্ষুধা-অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ছয়জনের। এনিয়ে ক্ষুধায় মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ৩৬৭ জনে। যাদের মধ্যে ১৩১ জন শিশু।

গত ২২ মাসে এ পর্যন্ত ৬৩ হাজার ৬৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ৬০ হাজার ৯১৪ জন আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন