আসছে নতুন দল, ভোটে লড়তে লাগবে কী

new-party-to-be-formed-friday

নেতৃ্ত্ব নিয়ে বিরোধের মধ্যেই নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের মধ্যে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠার নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এই রাজনৈতিক দল গঠিত হচ্ছে।

শুক্রবার ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটবে এই দলের।

সেই সমাবেশের অনুমতি চেয়ে বুধবার ঢাকা মহানগর পুুিলশের কাছে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

বুধবার অভ্যুত্থানকারী শিক্ষার্থীদের নতুন ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মারামারির পর নতুন রাজনৈতিক দলের কমিটির পদ নিয়ে বিরোধের খবরও আসছে।

দলের নাম এখনও জানা যায়নি। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলামের থাকাটা অনেকটাই নিশ্চিত। সেজন্য সরকারি পদ উপদেষ্টার দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি।

তবে অন্য পদগুলোতে কে থাকবে, কে থাকবে না, তা নিয়ে তীব্র মতবিরোধ চলছে। এরমধ্যে নাগরিক কমিটি কেন্দ্রীয় চারটি পদ রেখে বাকি সব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে।

বাংলাদেশের সংবিধানে দল গঠনের অধিকা্র সবাইকে দেওয়া আছে। কিন্তু দল গঠন করেই নির্বাচনে যাওয়ার পথ ২০০৮ সাল থেকে বন্ধ।

এখন কেবল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত দলই দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।

বর্তমানে ৫০টির মতো দল ইসিতে নিবন্ধিত। তারা দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশ নেওয়ার যোগ্য। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তাদেরও দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই, যদিও তারা নিবন্ধন ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকার হটানোর আন্দোলন নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা এখন দল গঠন করলেই ভোট করার ছাড়পত্র পাচ্ছে না।

ভোটে অংশ নিতে চাইলে তাদের কিছু শর্ত পূরণ করে ইসি থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। আগামী ডিসেম্বরে যদি ভোট হয়, তাহলে তার আগে নিবন্ধনের খাতা নতুন করে খুলবে ইসি, তখন আবেদন করতে পারবে নতুন দল।

ফলে নতুন দলের নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে সময় থাকছে পাঁচ থেকে ছয় মাস। কারণ ভোটের অন্তত এক-দেড় মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। তার আগেই নিবন্ধনের সব প্রক্রিয়া সারতে হবে ইসিকে।

নিবন্ধনের শর্ত কী

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে যত আইন আছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণটি হলো গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ বা আরপিও।  এই আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা’ প্রণয়ন করেছে।

সেখানে রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে হলে তিনটি শর্ত পূরণের কথা বলা আছে।

সেই শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— (১) স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত যে কোনো সংসদ নির্বাচনে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসনে জয়ী হওয়ার ইতিহাস থাকতে হবে, (২) যে কোনো একটি আসনে দলীয় প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে, (৩) কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কার্যালয়, অন্তত ১০০টি উপজেলায় কার্যালয় এবং প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তত ২০০ জন ভোটারের তালিকাভুক্তি থাকতে হবে।

অর্থাৎ কোনো দলকে নিবন্ধন পেতে হলে এই তিনটি শর্তের যে কোনো একটি পূরণ করতে হবে।

যেহেতু শিক্ষার্থীদের দলটি নতুন, সেক্ষেত্রে প্রথম দুটি শর্ত পূরণের সুযোগ নেই, তাই তৃতীয় শর্তটি পূরেণ করতে হবে।

এছাড়া শর্তের মধ্যে রয়েছে- দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত, ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনকে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন হিসেবে না রাখা এবং বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য তৃণমূলের ভোটে প্যানেল প্রস্তুত করার ব্যাপারে সুস্পষ্ট বিধান রাখা।

এই শর্তগুলো এখন রয়েছে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে নির্বাচন সংস্কার কমিশন করেছে, তারা শর্ত শিথিলের সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশমালা বাস্তবায়িত হলে নতুন দলের শর্ত পূরণ আরও সহজ হয়ে যাবে।

সংস্কার কমিশন নতুন দল নিবন্ধনে ক্ষেত্রে সুপারিশ করেছে, ১০ শতাংশ জেলা ও পাঁচ শতাংশ উপজেলায় অফিস এবং সারা দেশে সবমিলিয়ে ৫ হাজার সদস্য থাকলে নিবন্ধন পেতে পারে।

ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি এবিষয়ে বিবিসি বাংলাকে বলেন, “যদি নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন করার আগেই সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আইন সংশোধন করা হয়, তাহলে তাদের জন্য সবকিছু শিথিল থাকবে। নয়তো পুরনো আইনই বহাল থাকবে।”

ভোটের আগে যে সময় আছে, তাতে সুপারিশ আমলে নিয়ে আইন সংশোধন করা সম্ভব কি না– এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “যেহেতু সংসদ নাই, সেহেতু অধ্যাদেশ জারি করে করতে চাইলে এর মাঝেই করা যাবে।”

কোনো দলের গঠনতন্ত্র যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে নিবন্ধন নাও দিতে পারে ইসি। জামায়াত এই কারণেই নিবন্ধন হারিয়েছে।

সব মিলিয়ে নিবন্ধন পেতে কতটা সময় লাগতে পারে, সেই ধারণা দিয়ে জেসমিন টুলি বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষ হলে একটি রাজনৈতিক দল সাধারণত দুই থেকে তিন মাসের মাঝে নিবন্ধিত হয়ে যায় এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।

নতুন দল যেকোনো প্রতীক চাইতেই পারে। তবে আইনগতভাবে, নির্বাচন কমিশন বিধিমালা মেনে সেই প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে থাকে।

দল ঘোষণার আগে কমিটি বিলুপ্ত

জাতীয় নাগরিক কমিটি বুধবার সাধারণ সভা করে সব কমিটি বিলপ্ত ঘোষণা করেছে। রাজনৈতিক দলের গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির বাকি সব নেতৃত্ব কাঠামো, নির্বাহী কমিটি, সেল ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের এক মাস পর ৮ সেপ্টেম্বর ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ সফল করার লক্ষ্যে নাগরিক কমিটি গঠিত হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী হন এর আহ্বায়ক এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন হন সদস্য সচিব।

এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাও এতে যুক্ত হন। কমিটির মুখ্য সংগঠক হন সারজিস আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কের পদে থা্কা হাসনাত আব্দুল্লাহ নাগরিক কমিটিতে না থাকলেও দল গঠনের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় রয়েছেন।

নাগরিক কমিটির বুধবারের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দলে যোগদানকারী সব কেন্দ্রীয় সদস্যের সদস্যপদ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি দলের আত্মপ্রকাশের আগ পর্যন্ত বহাল থাকবে। কেউ নতুন রাজনৈতিক দলের কমিটিতে পদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার নাগরিক কমিটির সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। যারা দলে যোগ দিচ্ছেন না, তাদের সদস্যপদ বহাল থাকবে।

নাগরিক কমিটির আহবায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক শুক্রবার থেকে পরবর্তী ১৫ দিন অনানুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তাদের উদ্যোগে নাগরিক কমিটির ফোরাম পরবর্তী নেতৃত্ব কাঠামো ঠিক করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশের পর জাতীয় নাগরিক কমিটি ‘সিভিল-পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে থেকে যাবে।

এদিকে নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাফে সালমান রিফাত এবং আলী আহসান জুনায়েদ নতুন রাজনৈতিক দলে না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।

রিফাত ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “২৮ তারিখে ঘোষিত হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলে আমিও থাকছি না। তবে আমার রাজনৈতিক পথচলা থেমে থাকবে না। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক সম্ভাবনার যে জোয়ার তৈরি হয়েছিল তাতে শর্ট টার্মে খুব ভালো কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা রাখি না আপাতত।”

জুনায়েদ তার পোস্টে লিখেছেন, “আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি তরুণদের নেতৃত্বে যেই নতুন রাজনৈতিক দলটি আসছে, সেখানে আমি থাকছি না৷ সে কথা আমি আরো সপ্তাহখানেক আগেই জানিয়েছি দলের নেতাদের।

“বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে ও জাতির নজর নতুন দলের উপর নিবদ্ধ রাখতে নীরবতা বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু, চারপাশের গুঞ্জন থামছে না। তাই, স্পষ্ট করে রাখছি।”

জোনায়েদ ও রিফাত ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি। নতুন দলের সম্ভাব্য জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে জোনায়েদের নামও আলোচনায় ছিল। রিফাতের নামও ছিল পদের আলোচনায়।

কিন্তু নাগরিক কমিটির পদ নিয়ে শিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে অন্যদের বিরোধের খবরের মধ্যে জোনায়েদ ও রিফাতের বাংলাদেশের রাজনীতিকদের একটি প্রতিনিধি দলের হয়ে চীন সফরে যান তারা। এরপর নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, চীন সফরে কেউ নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিত্ব করছে না।

রাজনীতির হিসাব-নিকাশ

অভ্যুত্থানকারীদের নতুন দল ভোটে অংশ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই নেমেছে। তাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নতুন করে হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান সম্প্রতি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় তাদের আপত্তি নেই।

তবে বিএনপি নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়াকে সন্দেহের চোখে দেখছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সরকারে তেকে নতুন দল গঠনের প্রয়াস মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন।

তানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে। ফখরুলের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটেই নাহিদ জানান, তিনি দলে যোগ দিলে পদত্যাগ করবেন।

নাহিদ পদত্যাগ করলেও জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দুজন মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া উপদেষ্টা পদে রয়ে গেছেন।

তারা নতুন দলে এখনও যোগ না দিলেও এই উদ্যোগে তাদের সমর্থন থাকছে বলে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিএনপি নেতারা। শিক্ষার্থীদের নতুন দলকে ‘কিংস পার্টি’ও বলছেন তারা।

অভ্যুত্থানকারী ছাত্রনেতাদের আবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রয়েছে। সেই দাবিতে আবার বিএনপি একমত নয়।

বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন কতটা রয়েছে, সেই প্রশ্নে লেখক-গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, দেশভাগের পর এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের মতো এই মুহূর্তেও বাংলাদেশে রাজনীতিতে একটা শূন্যতা আছে। ফলে নতুন এই দল সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারে।

ভারত ভাগের পর মুসলিম লীগ ভেঙে আওয়ামী লীগ গঠন এবং স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ভেঙে জাসদ গঠনের ইতিহাস তুলে ধরেই এই বক্তব্য দেন তিনি।

আওয়ামী লীগ ও জাসদের যাত্রা শুরুর মধ্যে শূন্যতা পূরণের এই মিল দেখিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর তরুণরা বললো যে আমরা উদ্যোগ নেব। এটি গণবিদ্রোহের ফলাফল।

“তারা ঠিকভাবে চলতে পারলে, সংগঠিত হতে পারলে, জনগণের সাথে সংহতি নিয়ে সম্পৃক্ত হতে পারলে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে ছাত্ররা নতুন স্রোত তৈরি করতে ও শূন্যতা পূরণ করতে পারবে।”

এ সম্পর্কিত আরও খবর:

বৈষম্যবিরোধীদের নতুন দল: নাম কী, নেতা কে, কোন আদর্শে

আলোচনায় কিংস পার্টি, ইতিহাস কী বলে

আরও পড়ুন