যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ নামে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তিন নেতাকে আমন্ত্রণ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়াও দুই জন নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাতে।
অন্যরা হলেন, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করছেন ২০ জানুয়ারি। আর যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নেতৃত্বে আগামী ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে হবে এবারের এই ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’।
কিন্তু কী এই ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট?
ওয়াশিংটন ডিসির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক অনুষ্ঠান হল ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’। এই অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় নেতা একত্রিত হয়ে নিজেদের বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং জনসেবার নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাধারণত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
তবে মার্কিন সরকার এই ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়, আবার এর আয়োজকও নয়। অনুষ্ঠানের ব্যয়ও মার্কিন সরকারের কোষাকার থেকে আসে না।
বিগত মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন একাধিকবার এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, বিশেষ করে ২০১৯ এবং ২০২০ সালে তার দেওয়া বক্তব্য বেশ আলোচিত হয়েছিল।
২০১৯ সালে ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেছিলেন, “ধর্মীয় স্বাধীনতা আমাদের জাতির ভিত্তি এবং আমরা এটি রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এছাড়া তিনি গর্ভপাত বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে, “জীবনের পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।”
ট্রাম্পের ওই বক্তব্য আমেরিকার রক্ষণশীল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পায়।
২০২০ সালের প্রেয়ার ব্রেকফাস্টটি ট্রাম্পের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল তার অভিশংসন (ইমপিচমেন্ট ট্রায়াল) থেকে অব্যাহতির কয়েকদিন পর। এই অনুষ্ঠানে ট্রাম্প তার ভাষণে ঐক্য ও পুনর্মিলনের বার্তা দেওয়ার পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সমালোচনায় সরব হন।
তিনি সরাসরি তার বিরোধীদের আক্রমণ করে বলেছিলেন, “যারা বিশ্বাসের কথা বলে, অথচ অন্যের ক্ষতি করতে চায়, তারা মিথ্যাবাদী।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমি কখনোই মিথ্যা বা প্রতারণার কাছে মাথা নত করব না।”
এই বক্তব্যে ট্রাম্প স্পষ্টতই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতাদের এবং বিশেষকরে তাদের ধর্মীয় বার্তার কথা উল্লেখ করে তাদের সমালোচনা করেন।
তবে ট্রাম্পের ২০২০ সালের ভাষণটি ঐতিহ্যবাহী প্রেয়ার ব্রেকফাস্টের মূল ধারণা থেকে বিচ্যুত হওয়ায় বেশ সমালোচিত হয়েছিল। যদিও তার সমর্থকরা মনে করেন, এটি ছিল ট্রাম্পের রাজনৈতিক অবস্থান ও রক্ষণশীল নীতির প্রতি অঙ্গীকারের প্রকাশ।
‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ মূলত একটি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত। এটি বিশ্বাস এবং সংলাপকে উৎসাহিত করে। যদিও ট্রাম্পের সময়ে এটি অনেকটা রাজনৈতিক বার্তা প্রদানের মঞ্চে পরিণত হয়েছিল।