শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের আন্দোলনের সময় রাজধানীতে গুলিতে নিহত আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ এবং একই টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রূপাকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
এসময় সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়িয়ে ‘হয়রানি করা হচ্ছে’ অভিযোগ করে আদালতের কাছে সুবিচার চেয়েছেন একাত্তর টিভি সাবেক সাংবাদিক ফারজানা রূপা।
সোমবার সাংবাদিক দম্পতিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করার পর ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক তা মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না।
নতুন মামলার রিমান্ড শুনানিতে আইনজীবী ফারুকী বলেন, “তারা আন্দোলনের সময় উসকানি দিয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনাকে স্বৈরাচার বানাতে সহযোগিতা করেছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।”
এরপর ফারজানা রূপা কথা বলার জন্য আদালতের অনুমতি চান।
আদালত অনুমতি দিলে ফারজানা রূপাবলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ যেভাবে উসকানি দেওয়ার কথা বলেছে, তাহলে আমাকে সেই উসকানি দেওয়ার জন্য মামলা দেওয়া হোক। হত্যা মামলায় নিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে সাংবাদিকদের?
“বাংলাদেশের সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন আমি আপনার (বিচারক) কাছে রেখে গেলাম। আমি এর বিচার চাই।”
এরপর পিপি ফারুকী বলেন, “ছাত্র আন্দোলনে যারা গুলি করেছে তারা অপরাধী। আর যারা এই হত্যাকাণ্ডে সহায়তাকারী, তারাও একই অপরাধী। তাদেরও একই শাস্তি হবে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম কায়েম করার জন্য যা যা দরকার, গত ১৫ বছর ধরে শাকিল ও ফারজানা তা করেছে।”
এরপর সাংবাদিক শাকিল আহমেদ কিছু বলতে চাইলে মহানগর হাকিম দ্রুত শুনানি শেষ করে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এ নিয়ে এই সাংবাদিক দম্পতির ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো।
ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশ ছাড়ার চেষ্টার সময় ২১ অগাস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এই সাংবাদিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদাবর থানার এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
গত বছরের ৬ নভেম্বর, আনোয়ার হোসেনের বাবা আল-আমিন পাটোয়ারী মিরপুর মডেল থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আরও ১৪৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
