বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার আরেক মেয়েও যুক্তরাজ্যে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন, যেটিতে থাকতেন টিউলিপ সিদ্দিক ও তার স্বামী।
যুক্তরাজ্যের দ্য সানডে টাইমসে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে শনিবার।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডের এমন একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন যেটি তার বোন আজমিনা সিদ্দিককে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছিল।
টিউলিপ যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। মন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন।
টিউলিপ ও আজমিনা সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা রাজনীতিতে না থেকেও প্রভাব বিস্তারের জন্য বাংলাদেশে বেশ আলোচিত।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অর্থ কেলেঙ্কারিতে ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী রেহানার ভূমিকা থেকে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়।
তিন সন্তানের জননী রেহানার আরেক সন্তান রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি স্থায়ীভাবে বসবাস করেন ফিনল্যান্ডে।
হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটি ২০০৯ সালে আজমিনাকে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশি আইনজীবী মঈন গণি। তিনি শেখ হাসিনার সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবিও রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে বলা হয়েছে, অর্থ বা আর্থিকমূল্য রয়েছে, এমন কিছু ছাড়াই ফ্ল্যাটটি শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনাকে দেওয়া হয়েছিল।
ফ্ল্যাট হস্তান্তরের সময় আজমিনার বয়স ছিল ১৮ বছর।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে টিউলিপ ওয়ার্কিং মেনস কলেজের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি নথিতে তার ঠিকানা হিসেবে ফ্ল্যাটটি তালিকাভুক্ত করেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্যামডেন আর্টস সেন্টার এবং মার্চে হ্যাম্পস্টেড ওয়েলস অ্যান্ড ক্যাম্পডেন ট্রাস্টের ট্রাস্টি হওয়ার পরও তিনি একই ঠিকানা ব্যবহার করেন।
তার স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পার্সিও ২০১৬ সালের মে মাস পর্যন্ত এটিকে তার ঠিকানা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। তখন টিউলিপ হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের লেবার এমপি ছিলেন।
টিউলিপের বোন আজমিনা শিশুদের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। ফ্ল্যাটটি ২০২১ সালে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করে দেন তিনি।
ফ্ল্যাটটির আগের মালিক আইনজীবী মঈন গণি আন্তর্জাতিক বিরোধসংক্রান্ত বিষয়ে কয়েক বছর বাংলাদেশের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।
২০২১ সালে শেখ হাসিনার তৎকালীন সরকার বিশ্বব্যাংকের একটি প্যানেলে দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে মনোনীত করেছিল।
গত ৫ অগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা দেশ ছাড়ার সময় তার সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ ও আজমিনার মা রেহানা।
দুই বোন এক সঙ্গে ভারতে গেলেও ব্রিটিশ নাগরিক রেহানা ব্রিটেনে চলে যান।
এ সম্পর্কিত অন্যান্য প্রতিবেদন: