বিএনপির মনোনয়ন তালিকায় ‘সবে ধন নীলমণি’ নিতাই-গয়েশ্বর

ঢাকায় এক সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ফাইল ছবি।
ঢাকায় এক সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ফাইল ছবি।

বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি হলেও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন তালিকায় তার প্রতিফলন ঘটেনি; মনোনয়ন তালিকায় নাম রয়েছে মাত্র ২ জনের।

দেশের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশের বেশি হিন্দু জনগোষ্ঠী। সে হিসেবে মনোনয়ন দিলেও প্রার্থীর সংখ্যা হওয়ার কথা কমপক্ষে ২৪ জন। তবে হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন দুই জন, শতাংশের হিসেবে যা শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ (০.৬৭%)।

বিএনপির প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, মাগুরা-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন নিতাই রায় চৌধুরী এবং ঢাকা-৩ (কেরাণীগঞ্জ একাংশ) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন গয়েস্বর রায়। দুজনই দীর্ঘদিন ধরে দলের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সক্রিয়।

বাদ পড়াদের তালিকায় রয়েছেন, ঢাকা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিপুণ রায়, ঝিনাইদহ-৪ আসনে খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, খাগড়াছড়ি আসনে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সমীরন দেওয়ানসহ দেশের বিভিন্ন আসনে অন্তত অর্ধশতাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী হিন্দু নেতা।

বিএনপির ভেতরে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক নেতাকর্মী। তারা বলেন, দেশের প্রায় ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী হিন্দু হলেও মনোনয়ন তালিকায় তাদের প্রতিনিধিত্ব কার্যত নেই বললেই চলে।

তারা অভিযোগ করেন, হিন্দু নেতাদের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ ও সাংগঠনিক অবদান থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কারণে তাদের উপেক্ষা করা হয়েছে।

দলের নির্বাচন শাখা সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়ন নির্ধারণে একাধিক ধাপের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে। তৃণমূল কমিটির প্রস্তাবের পরও চূড়ান্ত তালিকায় হিন্দু নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক জেলা কমিটির নেতারা জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত বিএনপির “অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি”র ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ না দিলে গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল হবে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

বর্তমানে বিএনপির সর্বশেষ কমিটিতে হিন্দু নেতাদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য নয়। পূর্ববর্তী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তালিকায় হিন্দু প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৪, এবার তা নেমে এসেছে ২-এ।

তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, “বিএনপি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের কথা বললেও বাস্তবে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বৈষম্য রয়েছে। দেশের ৩ কোটি হিন্দু জনগোষ্ঠীকে কার্যত রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক করা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads