‘তৌহিদী জনতার’ হুমকিতে বন্ধ ‘শেষের কবিতা’ নাটকের প্রদর্শনী

নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজিত 'শেষের কবিতা' নাটকের দশ্য
নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজিত 'শেষের কবিতা' নাটকের দশ্য

‘তৌহিদী জনতার’ হুমকি চিঠি পেয়ে নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজিত ‘শেষের কবিতা’ নাটকের প্রদর্শনী বাতিল করে দিয়েছে মহিলা সমিতি মিলনায়তন কর্তৃপক্ষ।

চৈত্রসংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকার নাটক সরণির মহিলা সমিতি মিলনায়তনে টানা দুই দিন এ নাটকের প্রদর্শনী হওয়ার কথা ছিল।

এ নাটকের প্রদর্শনীর সময় মহিলা সমিতিতে ভাঙচুর হলে তার দায় ‘তৌহিদী জনতা’ নেবে না বলা হয়েছে হুমকির ওই চিঠিতে। আর ওই চিঠি পেয়ে ‘নিরাপত্তার’ কথা বিবেচানায় নিয়ে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ প্রাঙ্গণেমোরকে দেওয়া মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।

‘শেষের কবিতা’ নাটকের নির্দেশক নূনা আফরোজ বলেন, “আমরা সব রকম প্রস্তুতি শেষ করে প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। সকালে আমাদেরকে জানানো হল, মিলনায়তনের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। ‘তৌহিদী জনতা’ নাকি হুমকি দিয়েছে।”

মহিলা সমিতির এক্সিকিউটিভ অফিসার সৈয়দা শারমিন আরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কাছে একটা চিঠি এসেছে ‘তৌহিদী জনতা’ নামে। মহিলা সমিতিতে তো আরো অনেক ধরণের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। মহিলা সমিতির নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রাঙ্গণেমোরকে দেওয়া মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কী না প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি। আমাদের কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিল করেছে।”

মহিলা সমিতির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “দেশের যে অবস্থা চলছে, তা তো দেখছেনই। পুলিশকে জানালে কি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে? আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার কথাও তো ভাবতে হবে। এখন মহিলা সমিতিতে এসে কেউ যদি ‘তৌহিদী জনতা’ নামে ভাঙচুর করে, তবে কে দায় নেবে? আমাদের তো বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। মহিলা সমিতির নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই আসলে প্রদর্শনীটি বাতিল করা হয়েছে।”

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে মহিলা সমিতি মিলনায়তনে একদল ব্যক্তির হুমকির মুখে স্থগিত হয়েছিল ‘ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব’। পরে রোজার মাসে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ কোনো নাট্যদলকে মিলনায়তনে বরাদ্দ দেয়নি।

গেল বছরের নভেম্বরের শুরুতে রাজধানীতে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় একদল ব্যক্তির বিক্ষোভের মুখে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী মাঝপথে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলেন আয়োজকরা।

আরও পড়ুন