অন্তর্ভুক্তি নির্বাচনই পারে দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে, এপি নিউজকে জয়

সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে এপি নিউজ।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে এপি নিউজ।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যদি আওয়ামী লীগের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচন বৈধ হবে না বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেছেন, দলটিকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হলে তা ‘প্রতারণামূলক’ হিসেবে গণ্য হবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে।

এপি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।

“আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই তুলে নিতে হবে। নির্বাচন হতে হবে মুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক। বর্তমানে যা হচ্ছে, তা আমার মা ও আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। এটি ন্যায়বিচারের নামে রাজনৈতিক কারসাজি।”

আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিকে সরব হতে দেখা যাচ্ছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এইচআরডব্লিউসহ ৬টি সংস্থা দলটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের পথে অন্তরায় হিসেবে অভিমত দিয়েছে।

এসব সংস্থা অবিলম্বে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নির্বাহী আদেশে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদকে ইউনূসকে সম্প্রতি চিঠিও দিয়েছে।

বাংলাদেশে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।

“যদি আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়, তবে দেশ আরও গভীর অস্থিরতায় নিমজ্জিত হবে,” যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আওয়ামী লীগকে যদি নির্বাচনের প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় না দেওয়া হয়, তবে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য হবে বলে তিনি মনে করেন না।

তিনি, “যদি আমাদের প্রস্তুতির সুযোগ না দেওয়া হয়, তবে শেষ মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াও নির্বাচনের বৈধতা ফেরাতে পারবে না। তখন নির্বাচন হবে একপ্রকার প্রতারণা।”

এপির সঙ্গে ওই সাক্ষাতকারে ইসলামী দলগুলোর উত্থান নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত হাসিনাপুত্র।

এ বিষয়ে জয় সতর্ক করে বলেন, যদি নির্বাচন স্বচ্ছ না হয়, তবে ইসলামপন্থী দলগুলো সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে।

“গত এক বছরে জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামপন্থী দলগুলো ক্রমেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল মূল্যবোধের জন্য বড় হুমকি।”

গত বছর সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় সহিংসতায় নিহতদের ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, এসব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন, জামিন পাচ্ছেন না, অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

“আমার পরিবারের সদস্যসহ অনেক নেতাকর্মী দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছেন, জামিন পাচ্ছেন না। এটি স্পষ্ট রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।”

গত এক বছরে সরকারি নিপীড়নে আওয়ামী লীগের অন্তত ৫০০ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন বলেও জানান জয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর:

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads