মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিস্তারিত তুলে ধরে বুধবার প্রধান প্রতিবেদন সাজিয়েছে দেশের বেশিরভাগ সংবাদপত্র। এর বাইরে বিগত ১৫ বছরে নতুন করে ১৮ হাজার ১৬৮ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তি, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় পাকিস্তানি মডেল অনুসরণের প্রবণতা, ভিসা জটিলতার কারণে ৩৫ হাজার বাংলাদেশির ওমরাহ পালন ঘিরে অনিশ্চয়তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার মতো বিষয়গুলো নিয়ে করা প্রতিবেদনও গুরুত্ব পেয়েছে সংবাদপত্রগুলোতে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বুধবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিগত ১৫ বছরে ১৮ হাজার ১৬৮ জনকে নতুন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে– এমন খবর দিয়ে খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘১৫ বছরে নতুন মুক্তিযোদ্ধা ১৮১৬৮’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনকালে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৯০টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভার মাধ্যমে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্তি ও যাচাই-বাছাই করা হয়। জামুকা বলছে, এ সময় সভাগুলোতে ১৮ হাজার ১৬৮ জনকে নতুন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। একই সময়ে পাঁচ হাজার ৯৮৭ জন অমুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে।
তবে এ সময় অমুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম লেখানোর বেশ কিছু অভিযোগও উঠেছে। এসব ঘটনায় উল্লেখযোগ্য শাস্তি না হলেও কারো কারো সনদ বাতিল করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এলে নতুন করে অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তনসহ জামুকা আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রথম আলো
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধন করে হতে যাওয়া নতুন অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘কেউ হবেন মুক্তিযোদ্ধা, কেউ সহযোগী’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে রণাঙ্গনে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন এবং যাঁরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, শুধু তাঁরাই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার’ স্বীকৃতি পাবেন। এর বাইরে যাঁরা দেশে-বিদেশে থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন, বিশ্বজনমত তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন, তাঁরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধন করে নতুন যে অধ্যাদেশ হতে যাচ্ছে, তাতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এর আগে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছিল ২০২২ সালে। সর্বশেষ সংজ্ঞায় মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন এবং যাঁরা বিশেষ অবদান রেখেছিলেন, তাঁদের সবাইকে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তাঁরা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রায় সবাই বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন আর যাঁরা বিভিন্ন উপায়ে অবদান রেখেছেন, তাঁরা একই কাতারে থাকতে পারেন না। যে কারণে সবার মতামত নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হচ্ছে।

সমকাল
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিস্তারিত নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘আগেও বলেছি, আবারও বলছি- এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান বলেছেন, ‘আমরা চাই, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হোক। নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে শুরু করবে বলে আশা করছি।’
একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষণ শুরু করে প্রধান উপদেষ্টা চব্বিশের অভ্যুত্থানে হাজারো নিহতের প্রতি জাতির পক্ষে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে; সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।

ইত্তেফাক
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিস্তারিত নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘আবারও বলছি ডিসেম্বর থেকে জুনে নির্বাচন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি-এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। তার এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করেছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাই-আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হোক। এজন্য, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনায় নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে শুরু করবে বলে আশা করছি।

যুগান্তর
বিগত সময়ে সরকারগুলোর অনীহা আর আন্তর্জাতিক জটিলতায় লালমনিরহাট বিমানবন্দরের কার্যক্রম আটকে আছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালু সময়ের দাবি’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত সরকারগুলোর অনীহা আর আন্তর্জাতিক জটিলতায় আটকে আছে লালমনিরহাট বিমানবন্দরের কার্যক্রম। বিমানবন্দরটি জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূকৌশলগত কারণে দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বেশ কয়েকবার চালুর উদ্যোগ নিলেও নানা কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিল্প-বাণিজ্য প্রসার এবং ভৌগোলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব হিসাব-নিকাশ পালটে দিতে পারে এই বিমানবন্দর। এটি চালু হলে চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে আঞ্চলিক হাব হিসাবে গড়ে উঠবে। এতে বাংলাদেশের উন্নয়নে খুলবে উত্তরের দুয়ার। এ অবস্থায় দেশি-বিদেশি চাপ উপক্ষো করে দেশের স্বার্থে এই বিমানবন্দর দ্রুত চালু করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

বণিক বার্তা
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় পাকিস্তানি মডেল অনুসরণ করা হয়েছে– এমন বিশ্লষণ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘পাকিস্তান আমলের স্বৈরতন্ত্রের মডেল অনুসৃত হয়েছে বাংলাদেশেও’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্কান্দার মির্জাকে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করে ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের শাসনভার হাতে তুলে নেন আইয়ুব খান। এর পর এক দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। তার স্বৈরশাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার কারিকর হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে সিএসপি (সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান) আমলাতন্ত্র ও এলিট সামরিকতন্ত্র। শুধু আইয়ুব খান নন, পাকিস্তানে তার পরে ক্ষমতায় আসা স্বৈরশাসকদেরও ক্ষমতার বড় ভরকেন্দ্র ছিলেন এলিট সিএসপি ও মিলিটারি কর্মকর্তারা।
এমনকি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশেও স্বৈরশাসনের ক্ষেত্রে একই মডেল অনুসৃত হয়েছে, যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও শেখ হাসিনার শাসনামল। সরকারি আমলা ও সামরিক বাহিনীর অনুগত এলিটদের সহায়তায় টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড গড়েছেন শেখ হাসিনা। একই কায়দায় এরশাদও ক্ষমতায় ছিলেন টানা সাত বছর।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
স্বাধীনতা অর্জনের পর বিগত পাঁচ দশকের বেশি সময়জুড়ে বাংলাদেশ নানা ক্ষেত্রে সাফল্য দেখালেও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এখনও পিছিয়ে আছে– এমন বিশ্লেষণ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘সুশাসনই বড় অপ্রাপ্তি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো আর শূন্য ভান্ডার নিয়ে যাত্রা করা বাংলাদেশ এখন আর সে অবস্থায় নেই। নানা চড়াই-উতরাইয়ে অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশ বেশ কিছু ক্ষেত্রে এগিয়েছে সাফল্য দেখিয়ে। কিন্তু পাঁচ দশকের বেশি সময় পরও সত্যিকার সুশাসনের ছিটেফোঁটাও আসেনি দেশে। একের পর এক সরকার দেশ শাসন করলেও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেউই। বরং শাসকগোষ্ঠীর ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের কারণে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এসেও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে বিশৃঙ্খলা। ফলে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা বিশ্বের গুটিকয় দেশের অন্যতম বাংলাদেশের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুশাসন শুধু আইনশৃঙ্খলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটা সব ক্ষেত্রের। সামগ্রিক সুশাসনের অভাবেই এখনো আসেনি প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক শৃঙ্খলা। ফলে উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছায় না। এ কারণে যে বৈষম্য দূর করতে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন, সেই ধনী-গরিব ও উঁচুনিচুর বৈষম্য এখনো বাড়ছে হুহু করে।

নয়া দিগন্ত
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিস্তারিত নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারো বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।’ তিনি বলেন, আমরা চাই, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এ জন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনায় নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে শুরু করবে বলে আশা করছি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে : প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে মত দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কাজে খুবই ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তাদের মতামত তুলে ধরছেন। কোনো রাজনৈতিক দল কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে, কোনটিতে দ্বিমত হয়েছে- সেসব তারা জানাচ্ছেন। এটা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত সুখকর বিষয় যে, প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে মত দিচ্ছে।

আজকের পত্রিকা
সৌদি আরব সরকার ওমরাহ ভিসা কমিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশিদের ওমরাহ পালন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘ভিসা জটিলতায় অনিশ্চিত ৩৫০০০ মানুষের ওমরাহ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রস্তুতি নিলেও ওমরাহ পালন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশির। সৌদি আরব সরকার ওমরাহ ভিসা কমিয়ে দেওয়ায় এই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
উড়োজাহাজের টিকিট, সৌদি আরবে বাড়ি বা হোটেল বুকিং দিয়েও নির্ধারিত সময়ে ভিসা না পাওয়ায় ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের পাশাপাশি ওমরাহ এজেন্সিগুলোও আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছে। এয়ারলাইনসগুলোও সমস্যায় পড়ছে। হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করলেও এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সূত্র বলছে, সম্প্রতি সৌদি আরব ওমরাহ ভিসায় কোটা ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এর প্রভাব বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীদের ওপরও পড়েছে। আগে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ ওমরাহ ভিসার আবেদন অনুমোদিত হলেও রমজান মাসের শুরুতে এই হার নামে ৮-১০ শতাংশে। রমজানের শেষ দিকে তা আরও কমে ২-৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

দেশ রূপান্তর
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিস্তারিত নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যাতে হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজবের মহোৎসবের জন্য জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত পলাতক অপশক্তিকে দায়ী করে সামগ্রিক ঐক্য দিয়ে সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। এ ছাড়া অভ্যুত্থান দমাতে যারা গণহত্যায় জড়িয়েছিল, এ দেশের মাটিতে তাদের বিচার করার প্রতিশ্রুতি আবার তুলে ধরেছেন ড. ইউনূস।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।